নিজস্ব প্রতিবেদকঃ

কক্সবাজার তানযীমুল উম্মাহ হিফয মাদ্রাসায় ‘সবক’ প্রদান অনুষ্ঠান সম্পন্ন হয়েছে।

বৃহস্পতিবার (১৬ আগষ্ট) সকালে শহরের খুরুশকুল রাস্তার মাথা সংলগ্ন প্রতিষ্ঠানটির ক্যাম্পাসে ‘সবক’ অনুষ্ঠান আয়োজন করা হয়।

সবক নেয়া ৫০ শিক্ষার্থীর মধ্যে ১০ জনকে হিফয, ২২ জনকে নাযেরা ও ১৮ জনকে আমপারা নাযেরা’র সবক দেয়া হয়।

এবার মাদ্রাসাটির কক্সবাজার শাখার ৮ম ব্যাচ হিসেবে ১০ শিক্ষার্থীকে হিফযের সবক দেয়া হয়েছে। তাদের মধ্যে ৫ জন ছেলে ও ৫ জন মেয়ে রয়েছে।

আর ‘সবক’ মানে হলো আনুষ্ঠানিকভাবে হিফয, নাযেরা ও আমপারা নাযেরা পাঠদান শুরু করা।

কক্সবাজার শহরের উমিদিয়া জামেয়া ইসলামিয়ার পরিচালক, লালদীঘির পাড়ের বায়তুর রহমান জামে মসজিদের খতিব ও পেশ ইমাম ক্বারী মাওলানা আতাউল্লাহ আনুষ্ঠানিকভাবে শিক্ষার্থীদের ‘সবক’ দেন।

এতে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন কক্সবাজারের প্রথম ব্যারিষ্টার সমাজসেবক এস.এম. আবুল আলা ছিদ্দিকী।

ব্যারিষ্টার আবুল আলা ছিদ্দিকী বলেন, আমরা যারা প্রথাগত শিক্ষায় উচ্চ হচ্ছি তাদের জন্য আখেরাতের সঞ্চয়ে কিছুই জমা পড়ছে না। আর যারা হিফয ও মাদ্রাসা শিক্ষায় শিক্ষিত হয়ে জীবন গড়ছেন তাদের জন্য রয়েছে দুনিয়া ও আখেরাত দু’টোতেই কল্যাণ।

তিনি একজন প্রথাগত শিক্ষার্থীর উদাহরণ দিয়ে বলেন, ওই শিক্ষার্থীর যখন বাবা মারা গেলেন তখন এমন বেকায়দায় পড়লেন যে, বাবার জানাযা পড়ার মতো একটি সূরাও তার জানা ছিল না। আর ওই শিক্ষার্থী এই কক্সবাজারেরই সন্তান।

তিনি মনে করেন, যে সকল অভিভাবক তাদের সন্তানদের জন্য হিফয ও ইসলামি শিক্ষার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন তারা দুনিয়া ও আখেরাতের কল্যাণ করে নিয়েছেন।

‘সবক’ প্রদানকারি ক্বারী মাওলানা আতাউল্লাহ বলেন, চর্ম চক্ষু দিয়ে আল্লাহকে দেখা সম্ভব নয়। তবে কেউ যদি আল্লাহর সাথে কথা বলতে চায় তাহলে কুরআন তেলাওয়াতের মধ্যদিয়ে আল্লাহর সাথে যোগাযোগ ও কথা হয়ে যাবে।

তিনি বলেন, একজন কুরআনে হাফেযকে আল্লাহ ১১টি বেহেস্তে প্রবেশের ‘ভিসা’ দেবেন। একটি তার নিজের জন্য, অন্য ১০টি ‘ভিসা’ তার এমন ১০ জন নিকটাত্মীয়ের জন্য যাদের জাহান্নাম ওয়াজিব হয়ে গেছে।

আবারও ৫০ শিক্ষার্থীকে ‘সবক’ দিলো কক্সবাজার তানযীমুল উম্মাহ হিফয মাদ্রাসা

এই অনুষ্টানে সভাপতিত্ব করেন মাদ্রাসার অধ্যক্ষ কবি হাফেয মাওলানা রিয়াদ হায়দার।

অনুষ্ঠান পরিচালনা করেন হিফয বিভাগের প্রধান ক্বারী হাফেয মাওলানা আবদুল্লাহ আল মামুন।

সভা  বিশেষ অতিথি ছিলেন মাওলানা রফিকুল ইসলাম, কক্সবাজারের অন্যতম প্রধান অনলাইন নিউজ পোর্টাল কক্সবাজার ভিশন ডটকমের সম্পাদক ও দৈনিক সৈকতের নির্বাহী সম্পাদক আনছার হোসেন, অভিভাবক ও সমাজকর্মী পিয়ার মো. বাবুল, এডভোকেট জসিম উদ্দিন।

মাদ্রাসা অধ্যক্ষ হাফেজ মাওলানা রিয়াদ হায়দার বিশেষ মোনাজাত পরিচালনা করেন।

প্রসঙ্গত, এবারের হিফয ‘সবক’ গ্রহণকারি শিক্ষার্থীদের মধ্যে সাংবাদিক আনছার হোসেনের ছেলে আবদুল্লাহ নূর হোসেনও রয়েছে। হিফযের অন্য শিক্ষার্থীরা হলো কক্সবাজারের খুরুস্কুল ইউনিয়নের তেতৈয়ার সওদাগর পাড়ার হামিদ উল্লাহর মেয়ে জান্নাতুল মাওয়া শীমা, কক্সবাজার শহরের উত্তর রুমালিয়ারছড়ার মোহাম্মদ ইসলামের মেয়ে আসমা ইসলাম ইশানা, কক্সবাজারের ব্রীকফিল্ড রোডের হাজী ভবনের নাছির উদ্দিনের মেয়ে রাইসা বিনতে নাছির, কক্সবাজার শহরতলির বাসটার্মিনাল এলাকার মোহাম্মদ আবদুল্লাহর মেয়ে শহিদা আক্তার, শহরের তারাবনিয়ারছড়ার হাবিব উল্লাহর মেয়ে নাজিফা আহমেদ, টেকনাফের হোয়াইক্যং ইউনিয়নের বালুখালী এলাকার মোস্তাক আহমদের ছেলে মুহাম্মদ হোসাইন, কক্সবাজার পৌর এলাকার ৬নং ওয়ার্ডের এসএম পাড়ার রেজাউল করিম সিকদারের ছেলে তাসনিম রেজা রাফসান, শহরের তারাবনিয়ার মোহাম্মদ ইসলামের সাইফ ফারদিন শুরাইম ও টেকনাফের পল্লান পাড়ার শাকের বিন ফয়েজের ছেলে জাকির নায়েক। আর আবদুল্লাহ নূর হোসেন কক্সবাজার শহরের উত্তর নুনিয়াছড়া এলাকার বাসিন্দা সাংবাদিক আনছার হোসেন ও রোকসানা নূরের ছেলে।